#জুনিয়র_বর
writer -#আফরোজা_রায়হান
পর্ব -২৫
.....................®.................
.
বাদল চৌধুরী -মিসেস চৌধুরী (আঁখির আম্মু)প্লিস ওকে মানা করবেন না ৷আজ ওকে বলতে দিন, ওর মনে অনেক কষ্ট জমে আছে ৷আজ তা প্রকাশ করছে দিন ৷
.
নয়ন -প্লিস বোন(আঁখি) বোঝার চেস্টা কর ৷বাবা তোকে খুব ভালোবাসে ,বাবা নিজের ভুলটা বুঝতে পেরে অনেক কষ্ট পেয়েছে ৷তোকে এতোদিন পাগলের মতো খুঁজেছে ৷প্লিস তুই বাবা কে ক্ষমা করে দে ৷
.
আঁখি -কিসের ক্ষমা ,কারো প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নাই প্লিস আমাকে আমার মতো করে বাঁচতে দাও ৷
আমি যে তোমাদের বাড়ির মেয়ে এটা ভুলে যাও ৷
.
নয়ন - আঁখি.......
.
আঁখি -হুমম ভাইয়া ভুলে যাও আমি তোমার বোন...
.
নয়ন -তুই আমাকে ভাইয়া বলে ডাকলি .....
.
আঁখি -হুমম ডাকলাম , আর সবাইকে অস্বিকার করলেও তোমাকে তো অস্বীকার করতে পারবো না ৷ কারণ মায়া চৌধুরী তোমার আর আমার মা ৷
আমি তো মায়া চৌধুরী কে অস্বিকার করতে পারবো না কারণ সে আমার গর্ভধারীনি মা ৷ আর আমাকে জন্ম দিতে গিয়েই তো উনি মারা গেছেন তাই না .......
.
নয়ন -প্লিস বোন টা আমার ৷এসব ভুলে যা প্লিস....
.
আঁখি -না রে এসব তো আর চাইলেই ভুলে যাওয়া যায় না ৷
আর তুই ও তো আমাকে ঘৃণা করিস ৷আমার জন্যই তো তুই তোর মা কে হারিয়েছিস ৷
.
নয়ন -না রে বোন ৷আমি তোকে এই দোষারোপ কখনো করিনি ৷
.
আঁখি আর কাউকে কিছু না বলে উপরে চলে এলো ৷একাই ছাঁদের এক বসে আছে ৷
.
আজ চাঁদটা খুব সুন্দর করে আলো দিচ্ছে ৷আকাশ মেঘ মুক্ত ৷মিটমিট করে তারারা জ্বলছে ৷বসন্তের বাতাস বইছে সাথে মিষ্টি কিছু ফুলের গন্ধ ৷সব মিলিয়ে মুগ্ধ করা একটা পরিবেশ ৷
.
কিন্তু আঁখিকে যেনো আজ এসব ছুতেই পারছে না ৷
.
মনেরমদ্ধে একটা অজানা কষ্ট ৷কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে পেছনে তাকায় আঁখি ,দেখে আবির এসেছে ৷
আবির আঁখির পেছনে দাড়িয়ে আছে ৷
.
আবির আঁখির পাশে বসে আছে ৷কেউ কোনো কথা বলছে না ৷
আবির বেশ বুঝতে পারছে আঁখির চোখে পানি টলমল করছে ৷
কখন জানি তার মায়াবতী নিজের কষ্টটাকে অশ্রু দিয়ে প্রকাশ করে ৷
.
আবির জানে এ সময় আঁখিকে একা ছাড়লে ভালো হবে , তার কষ্টটা একটু হাল্কা করার জন্য তাকে কাঁদতে দিতে হবে ৷
.
কারণ কাঁদলেই মানুষের কষ্টটা একটু হাল্কা হয় ৷
.
কিন্তু তার পরো আবির আঁখিকে একা ছাড়তেছেনা কারণ তার মায়াবতী কাঁদলে যে তার খুব কষ্ট হয় ৷আর এই মেয়েটা যা জেদি না যানি কি না কি করে বসে ৷খুব ভয় হচ্ছে আবিরের ,তাই আঁখির পাছে চুপটি করে বসে আছে ৷
.
একটু আগেই তার মায়াবতী কি সুন্দর করে হাসছিলো ৷যেনো সর্গ থেকে কোনো পরী নেমে এসেছে ৷
কিন্তু হঠাৎ সব শেষ হয়ে গেলো ৷
.
আবির -আঁখি.....
.
আঁখি -হুমমম....
.
আবির -আমার দিকে তাকাও .....
বলেই আঁখিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো ৷
.
এতোক্ষন আঁখি অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রেখেছিলো কিন্তু আর পারলোনা আবিরকে জড়িয়ে ধরে হাউমাঁউ করে কেঁদে দিলো ৷
.
আবির শক্ত করে আঁখিকে জড়িয়ে রেখেছে নিজের বুকে ৷
কিন্তু আঁখিকে থামাচ্ছেনা কারণ আবির জানে আঁখির মনে অনেক কষ্ট জমে আছে তাই ওকে মন খুলে কাঁদতে দিচ্ছে ৷
.
নিজের মনের মানুষটাকে জড়িয়ে ধরে ক'জনি বা নিজের কষ্টটা এভাবে প্রকাশ করতে পারে ৷এই সৌভাগ্য সবার হয় না ৷
তাই হয়তো আঁখি আজ আবিরকে জড়িয়ে ধরে নিজের কষ্টটা প্রকাশ করছে ৷
.
ইভা আর রিফাত পেছনে দাড়িয়ে আছে ৷কেউ কিছু বলছে না ৷দুজনেই অনের দিকে তাকিয়ে আছে ৷
.
আবির -আঁখি ....
.
আঁখি -হুমম....
.
আবির -আমি সবটা জানতে চাই ৷প্লিস আমাকে বলবে ......
.
আঁখি আবিরের কাধ থেকে মাথাটা তুলে একবার আবিরকে দেখলো ৷তারপর আবিরকে ছেড়ে দিয়ে কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলো ৷
.
আবির -(আঁখির হাতটা ধরে )প্লিস.....
.
আঁখি -মাথা নেরে হ্যা সূচক এনসার দেয় ৷
.
আবির -আঁখিকে নিজের পাছে বসিয়ে ,নিজের হাতে আঁখির চোখের পানি মুছে দিয়ে ৷আঁখির মাথাটা নিজের কাধে নিয়ে ওকে ভরসা দিলো আমি আছি তোমার পাশে ৷কখনো কষ্ট পেতে দিবো না আমার মায়াবতীকে ৷
.
আঁখি মৃদু হাসি দিয়ে বলতে শুরু করলো ৷
.
বাদল চোধুরি আর মায়া চৌধুরী আমার আসল মা বাবা ৷আর নয়ন চৌধুরী আমার ভাই ৷
.
বাদল চৌধুরী আর মায়া চৌধুরী একে অপরকে খুব ভালোবাসতো ৷
কিন্তু দুজনের পরিবার এটা জানতে পারে ৷
.
পারিবারিক শত্রুতার কারণে তাদের সম্পর্কটা কেউ মেনে নেয় না ৷
এমন কি মায়া চৌধুরীর বিয়ে ঠিক হয় ৷বিয়ের রাতে বাদল চৌধুরী মায়া চৌধুরীকে নিয়ে পালিয়ে যায় ৷
এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করে ৷
.
এদিকে মায়া চৌধুরীর বাবা বাদল চৌধুরীর পরিবারের ওপর মামলা করে ৷
.
বাদল চৌধুরী এ খবর পেয়ে সেই রাতেই মায়া চৌধুরীকে নিয়ে চট্টগ্রাম চলে যায় ৷
সেখানে এক বন্ধুর সুবাদে বাদল চৌধুরী একটা ভালো চাকরি পেয়ে যায় ৷
.
এদিকে ওদের দুজনের কোনো খবর না পেয়ে ৷দু পরিবার ই চিন্তায় পরে যায় ৷কিন্তু পুরোনো শত্রুতা আর অহৎকার তাদের অন্ধ করে রেখেছিলো ৷
.
বাদল চৌধুরী আর মায়া চৌধুরীর সংসার খুব ভালোই যাচ্ছিলো ৷
দেখতে দেখতে ১ বছর কেটে গেলো ৷
মায়া চোধুরী কনছিভ করছে এ খবর সুনে বাদল চৌধুরী খুব খুশি হয় ৷
.
মায়া চৌধুরী একটি ছেলের জন্ম দেয় ৷
এ খবর বাদল চৌধুরীর পরিবার জানতে পারে ৷কারণ বাদল চৌধুরীর মা গপনে বাদল চৌধুরির সাথে যোগাযোগ রেখেছিলো ৷
.
তাদের বংশধর এসেছে এই খবর পেয়ে তারা মায়া চৌধুরীকে মেনে নেয় ৷
কিন্তু মায়া চৌধুরীর পরিবার তখনো মেয়েকে ক্ষমা করতে পারেনি ৷
.
ছেলে নয়ন চৌধুরী আর স্বামির সংসার নিয়ে মায়া চৌধুরীর দিন ভালোই যাচ্ছিলো ৷
ছেলের বয়স যখন ৭ বছর ৷তখন মায়া চৌধুরী আবার কনছিভ করে ৷
.
মায়া চৌধুরি যখন ৭ মাসের গর্ভবতী ৷তখন একবার মাথা ঘুরে সিটি থেকে পরে যায় ৷
.
ডক্টরের কাছে নিয়ে গেলে ৷ডক্টর জানায় মায়া চৌধুরীর গর্ভাশয়ে কিছু প্রোবলেম আছে ৷
তাই তাকে খুব সাবধানে চলতে হবে ৷
.
৯ মাসের মাঝামাঝি সময়ে মায়া চৌধুরী একদিন রাতে ২তলা থেকে নামতে গিয়ে মাথা ঘুরে নিচে পরে যায় ৷
.
সাথে সাথে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ ডক্টর জানায় আজই ডেলিভারি করতে হবে কারণ মায়া চৌধুরীর অবস্হা খুর ক্রিটিকাল ৷
.
মায়া চৌধুরী হাসপাতালে ভর্তি তার অবস্হার কথা শুনে তার পরিবার আর মেয়ের ওপর অভিমান করে থাকতে পারলো না ৷সবাই মেয়েকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে আসলো ৷
.
অপারেশান শুরু করার কিছুক্ষন পর ডক্টর এসে জানায় মায়া চৌধুরীর অবস্হা একদম ভালো না ৷
.
যে কোনো একজনকে বাঁচাতে হবে ৷হয় মা না হয় বাচ্চা ৷
.
বাদল চৌধুরী কিছুতেই এটা মানতে পারছে না তাদের এই বাচ্চাটা নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিলো ৷
.
কিন্তু সে কিছুতেই মায়াকে হারাতে পারবে না ৷তাই সে বলে দেয় তার মায়াকে লাগবে বাচ্চাটা লাগবে না ৷
.
মায়া চৌধুরীর পরিবার এতোদিন পর মেয়ের কাছে আসলো কিন্তু দেখা করতে পারেনি কারণ তার আগেই মায়াকে ওটিকে নিয়ে গেছে ৷
তারা কি করে নিজের মেয়েকে হাড়াতে চাইবে ৷
তাই তারাও নিজের মেয়েকেই চায় বাচ্চাটা চায় না ৷
.
.
২ ঘন্টা পর .......
ডক্তর ওটি থেকে বের হয়ে একটি কণ্যা সন্তান উপহার দেয় সবাই কে ......?
.
বাদল চৌধুরী -আমার মায়া কোথায় ডক্টর ৷
.
ডক্টর -সরি আমি আপনার স্ত্রী কে বাঁচাতে পারিনি ৷
.
বাদল চৌধুরী ডক্টরের শার্টের কলাট ধরে ৷
বাদল চৌধুরী -এই ডক্টর আপনি না বললেন একজনকে বাঁচানো জানে ৷আমি তো বাচ্চাটা চাইনি আমি মায়াকে চাইছি ৷তাহলে কেনো এটা করলেন আপনি ৷
.
ডক্টর -প্লিস আপনি শান্ত হন ৷আপনার স্ত্রীর অবস্হা আরো বেশি খারাপ হয়ে গেছিলো ৷আমরা তাকেই বাচাতে চেয়েছিলাম ৷কিন্তু তার বাঁচার চান্স ৭৪% ৷আর উনি আমাদের বললেন যে বাচ্চা নাকি আপনাদের চাই ৷তাই ওনার কথা মতো আমরা তবে আমরা আপনার স্ত্রীকে বাঁচানোর খুব চেষ্টা করেছি ৷সবটা আল্লাহর ইচ্ছা আমাদের কিছু করার নেই ৷
.
বাদল চৌধুরী সেখানেই জ্ঞান হারায় ৩ দিন পর জ্ঞান ফিরে ৷কিন্তু উনি বাচ্চাটাকে একদম সহ্য করতে পারে না ৷
বাচ্চা টাকে অস্বিকার করে ৷সে মনে করে বাচ্চাটার জন্যই তার মায়াকে হারিয়েছে ৷সব দোষ ওই বাচ্চাটার ৷
.
তাই সে বাড়ির সবাইকে জানিয়ে দেয় কেউ যেনো ওকে কিছু না খেতে দেয় ৷বাচ্চাটাকে যেনো রাস্তায় ফেলে দেয় ৷
.
এভাবে ৭ দিন কেটে যায় ৷
বাচ্চাটা মায়ের জন্য কাঁদে ৷ক্ষুদা পেলে কাঁদে ৷তাই রাতের অন্ধকারে বাদল চৌধুরী বাচ্চাকে রাস্তার মড়ে ফেলে আসে ৷
.
বাদল চৌধুরী যখন বাচ্চাটাকে নিয়ে বের হয় তখন বাদল চৌধুরীর মা জাহানারা চৌধুরী দেখতে পায় ৷তাই সে বাদল চৌধুরীকে অনুসরন করে ৷
বাদল চৌধুরী বাচ্চাটাকে ফেলে চলে আসে ৷এটা দেখে তার মায়ের বুক কেঁপে উঠে ৷তার মা জাহানারা চৌধুরী কোনো উপায় না পেয়ে বাচ্চাটাকে একটা এতিম খানায় রেখে আছে ৷
.
এর পর থেকে আর কেউ বাচ্চাটার কোনো খোঁজ পায় না ৷
.
তার কিছুদিন পর দুজন নিঃসন্তার বাবা মা বাচ্চাটাকে এডভ করে ৷
.
আর সে কেউ না ৷সে বাচ্চাটা হলাম আমি ,আঁখি চৌধুরী ৷
.
.
.
.
(চলবে.............)

Comments

Popular posts from this blog

পুলিশ বউয়ের রোমান্টিক অত্যাচার

#জুনিয়র_বর

Life💜Partner লাইফ💜 পার্টনার ।